নিউমার্কেটের একটি ঘটনা

0

ঢাকাবাসীর অতি প্রিয় মার্কেট, নিউমার্কেট। কয়েক যুগ চলে গিয়েছে কিন্তু নিউ মার্কেট সেই আদি নিউমার্কেটে,
সম্প্রসারণ করে বা নতুন নতুন বিল্ডিং তুলে এটা নতুন রূপ ধারণ করে নাই ।
তাই এখনও নিউ মার্কেটে গেলে পুরনো স্মৃতিগুলো মনে পড়ে এবং পুরনো স্মৃতির যে অবস্থান,ল সেটাও চিহ্নিত করা সম্ভব,কারন অনেক পুরনো দোকান একই আদলে এখনোও আছে।
নিউমার্কেটের তখন আমাদের সবচেয়ে প্রিয় রেস্টুরেন্ট ছিল আইসক্রিমের দোকান,
নভেল। ওখানকার মিল্কশেক খুব পপুলার ছিল। ওই দোকানটির এখন কোন অস্তিত্ব নাই।
এখনও নিউ মার্কেটে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ,
বিশেষকরে মহিলারা কেনাকাটার জন্য ভিড় করে,
যদিও মধ্যবিত্তের সংখ্যাই বেশি। বিত্তবানরা এখন এয়ারকন্ডিশন মার্কেটগুলোকে বেছে নেয়।
একমাত্র নিউমার্কেটের
দুই পাশে দোকানপাট, মাঝখানে প্রশস্ত রাস্তা। বারান্দা ও প্রশস্ত। এই সুবিধার জন্যই হয়তো নিউমার্কেট এখনো তার ঐতিহ্য ধরে রাখতে পেরেছে।

এবার আসল ঘটনায় আসি। মাঝেমধ্যে আমি বউকে নিয়ে নিউমার্কেটে যাই ছোটখাটো কেনাকাটা করার জন্য,
কিছুটা হাঁটাহাটি করার জন্য
অথবা আমজনতার সাথে চা খাওয়ার জন্য।
লাইব্রেরীগুলো যেদিকে আছে, সেখানটায় ফুটপাতের উপর বড় বড় কেতলি,
সব রকম চা এর বিশেষ ব্যবস্থা আছে। ওখানটায় প্রায় সময়ই জটলা লেগে থাকে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবাই চা খায়। একপাশে সমুচা সিঙ্গারার দোকানও আছে।
কোন কারণে নিউ মার্কেটে গেলে , আমি ওই ফুটপাতে দাঁড়িয়ে চা সিঙ্গারা মেরে দেই।

এখন আসল ঘটনা বলি।
আমি সাধারনত হাটার সময় বউ এর হাত দূরে রাখি।
ধানমন্ডি লেকেও আমরা দুজন হাত ধরাধরি করে হাঁটাচলা করি। এর কিছু সমালোচনাও কানে এসেছে।
আমার সেজ খালাও সকালে ধানমন্ডিতে হাঁটাহাঁটি করে। ওনিও আমাদেরকে হাত ধরাধরি অবস্থায় দেখেছেন।খালা ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আমার বউ কে বলেছেন, হাত ধরেছ যখন,
হাতটা কখনোই ছাড়বে না!

নিউমার্কেটের আজিমপুর গেট থেকে তিন নম্বর গেটের দিকে যাচ্ছিলাম দুবাই মার্কেটে যাবো বলে। একটা সরু রাস্তা দিয়ে আমরা দুইজন যাচ্ছিলাম, আশেপাশে কিছু মহিলাও ছিল।
ভিড়ের মধ্যে বউ হয়তো ছিটকে গিয়েছিল, সেটা বুঝতে না পেরে হাত ধরেই চলছিলাম।
হঠাৎ লক্ষ্য করলাম এ তো অন্য এক মহিলার হাত। আমি ওই হাতটা টেনে টেনে ভিড়ের মধ্যে হাঁটছিলাম।
বিষয়টা বুঝতে পেরে থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম। একটু দূর থেকে আমার বউ ব্যাপারটি লক্ষ্য করছিল। সে ছুটে আসলো ও আমার হতভম্ব ভাব দেখে সান্তনা দিয়ে বলল,
ভয় কি, আমি তো আছি!

ওদিকে ওই ভদ্রমহিলা কিছু রিএকশন না দেখিয়ে সামনের দিকে হাঁটা দিল। তারও এই আকস্মিক ঘটনায় হতভম্ব হওয়ারই কথা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *