মহা সত্যের সন্ধানে
বর্তমান ভূপৃষ্ঠে যত মানুষ আছে তার মধ্যে যদি প্রতিটি মানুষ ৬ ফুট লম্বা আড়াই ফুট চওড়া এক ফুট মোটা হয়,
তাহলে দৈর্ঘ্য প্রস্থ উচ্চতায় এক মাইল আয়তন বিশিষ্ট একটি বাক্সে সব মানুষকে বন্ধ করা যেতে পারে।
কথাটা আজগবি মনে হলেও নিতান্ত সত্য। পরে মানুষ ভর্তি এই বাক্সটি কে সমুদ্রতীরে নিয়ে সামান্য একটু ধাক্কা দিলে গভীর পানিতে গিয়ে পড়বে,
তারপর শতশত বছর অতিবাহিত হয়ে যাবে।
*মানব বংশ কফিনে কাপড়ে আচ্ছাদিত হয়ে চিরকালের জন্য পড়ে থাকবে।*
দুনিয়ার স্মৃতি পট থেকে মুছে যাবে মানুষ নামের জীব,
যারা এখানে দূর অতীতের কোন এলাকায় বসবাস করত।
সমুদ্রে আজকের মতই নিয়মিতভাবে তুফান আসতে থাকবে, সূর্য এমনিভাবেই রশ্মি বিকিরণ চতুর্দিকে আলোকোজ্জ্বল করে তুলতে থাকবে, ভূমন্ডল প্রতিনিয়ত স্বিয় মেরুদণ্ডের উপর আবর্তিত হতে থাকবে।
★বিশাল বিশ্বলোকের সীমাহীন বিস্তীর্ণ অসংখ্য সৌর লোক মানুষের এত বড় একটা দুর্ঘটনা টার কোনো গুরুত্ব দিবে না।★
কেননা কয়েক শত বছর পর একটু উঁচু ঢিবি নীরব ভাষায় সাক্ষ্য দিবে, এই হচ্ছে বিশ্বমানবতার সমাধি।
বহুকাল পূর্বে তাদের মাত্র একটি বাক্সে বন্দী করে সমাধিস্থ করা হয়েছিল।
*মানুষ কি এতই অন্তঃসারশূন্য যে তার ক্ষুদ্রায়তন জন্মভুমিতে সে কয়েকদিনের জন্য আবির্ভূত হবে আর তারপর নিঃশেষ ধ্বংস হয়ে যাবে?*
শুধু এতটুতেই কি মানব জীবনের চূড়ান্ত পরিণতি?
মানুষের সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান সধনা সাফল্য ও চরিতার্থ সংক্রান্ত যাবতীয় ঘটনার ইতিহাস,
মানুষের সঙ্গে সঙ্গেই চিরদিনের জন্য লুপ্ত হয়ে যাবে?
বিশ্বভুবন শাত্বত ওস্থায়ী হয়ে থাকবে —- মানুষ নামের কোন সত্বাই কোন কালে এখানে ছিল না, এটা কি করে বিশ্বাস করা যায়?
এ পর্যায়ে আরেকটি কথা তীব্রভাবে মনে বিঁধে,
মানুষের জীবন যদি দুনিয়াতে নিঃশেষ হয়ে যায় এবং তারপর আর কিছুই না থাকে,
তাহলে বলতে হবে এ ক্ষণস্থায়ী জীবন মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পরিপূর্ণতার জন্য যথেষ্ট নয়। মানুষ চায় দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে, মৃত্যু কারো কাম্য নয়।সে পেতে চায় দুঃখ ব্যথা ও কষ্ট থেকে মুক্তি এবং সুখ সমৃদ্ধ পূর্ণ জীবন।। কিন্তু সবার জন্যই মৃত্যু অবধারিত।
এ সীমাবদ্ধ নশ্বর জীবনে সে কামনা-বাসনার কিছু পায় না। কিছুদূর অগ্রসর হয়ে গেলেই মানুষ প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়ে পড়ে। মানুষের পক্ষে খানিকতা বেশ অনুকূল তারপরই প্রতিকূল।
তাহলে এই জগৎটা কি মানুষের জন্যে বানানো হয়নি?
*হাজার হাজার বছর ধরে মানব মনে যেসব অনুভূতি জেগেছে তার কোন মঞ্জিল নেই?*
অতীতের কি তার কোনো ভিত্তি নেই,
নেই ভবিষ্যতেও স্থিতি ও বাস্তবতা?
অথচ মানুষ একমাত্র জীব,
যার আগামীকাল সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা আছ, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তা করা একমাত্র মানুষেরই বিশেষত্ব,
মানুষ চায় তার ভবিষ্যৎ কে উত্তম থেকে উন্নততর করে গড়ে তুলতে ।
পিপীলিকা ও ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে, বাবুই পাখি বাসা বানায় কিন্তু ওদের এই কাজ স্বভাবগত অভ্যাস হিসাবে।
মানুষ ওঅন্যান্য জীব প্রাণীদের মধ্যে এটাই পার্থক্য।
এমনি ভাবে আমরা যখন আমাদের সমাজ জীবনের দিকে তাকাই তখন খুব বড় একটা শূন্যতার অনুভূতি আমাদের কে কঠিনভাবে পীড়া দেয়।
সমস্ত কিছু বিবেচনা করলে মানুষ
এই জীবন নিতান্তই অসম্পুন্ন।
★পরিপূর্ণতার জন্য এমন আরেকটি জগৎ প্রয়োজন যেখানে প্রত্যেকেই যথাযথ স্থানে ও মর্যাদা পাবে। ★
*বিশ্বলোকে মানুষের জন্য একটা বিরাট ব্যাপক আয়োজন। কিন্তু মানুষের জীবন এতই সংক্ষিপ্ত ও অসহায় যে*,
মানুষকে এখানে কেন সৃষ্টি করা হলো, তাই বুঝা যাচ্ছে না।
ঠিক এরকমই অবস্থায় একটি গম্ভীর কণ্ঠস্বর আমাদের কর্ণে ধ্বনিত হয় ঃ
★এই বিশাল বিশ্ব লোকের একজন সৃষ্টিকর্তা (আল্লাহ) রয়েছেন। ★
তিনি গোটা বিশ্বে লোক নিজের শক্তিতে সৃষ্টি করেছেন, নিজের ইচ্ছামত এটাকে গড়ে তুলেছেন, তাঁর অসাধারণ শক্তিবলে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনায় রয়েছে।
★তিনি আমার মাধ্যমে তার কিতাব সমগ্র মানবজাতির জন্য পাঠিয়েছেন, সে কিতাবের নাম আল কোরআন। ★
এ বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর কণ্ঠস্বর।
যা চৌদ্দশত বছর পূর্বে ধ্বনিত হয়েছিল।