নব্য ফ্যাসিবাদের  পদধ্বনি

0

২০২৪-এ সেপ্টেম্বর মাসের দুইটি ঘটনা হঠাৎ মনে পড়ে গেল

দুটি ঘটনাই জুলাই বিপ্লবের সাথে সম্পর্কিত।

সেপ্টেম্বরের কোন এক দিনে আমরা বুয়েট গ্রাজুয়েট ক্লাবের  সিনিয়র মেম্বারদের রুমটিতে বসে রাজনীতিক আলোচনা করেছিলাম।আমরা পাঁচজন ছিলাম বুয়েটের ৭৮ ব্যাচের  সহপাঠী, এবং একজন ছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং আরেকজন ছিলেন সেই সময়ে  জনপ্রিয় টকশোর সঞ্চালক।

নির্বাচনের আগে সংস্কার হতে হবে এবং কি কি সংস্কার হতে পারে সে নিয়ে নাতির দীর্ঘ আলোচনা হয়েছিল।

শেষ মুহূর্তে আমার এক বন্ধু প্রশ্ন ছুড়ে দিল, সংস্কার কে বাস্তবায়ন করবে অথবা কিভাবে বাস্তবায়িত হবে কারণ পার্লামেন্ট ছাড়া তো কোন আইন প্রণয়ন করা যাবে না।

উপস্থিতি বিশেষজ্ঞ দুইজন অনেকটা কিং কর্তব্যবিমুড় অবস্থায় ছিলেন এবং যুক্তিসঙ্গত কোন উত্তর দিতে পারেন নাই।

দ্বিতীয় ঘটনাটাও সেই সেপ্টেম্বর মাসের শেষার্ধে যখন আমি গিন্নিকে নিয়ে উত্তরার

 দিয়াবাড়ি তে  গিয়েছিলাম কাশফুল দেখার জন্য।

ফেরার পথে আমরা দুজনে জুলাই  বিপ্লব নিয়ে আলাপ করছিলাম হঠাৎ গাড়ির ড্রাইভার একটা কথা বলে ফেলল। সে বলল এই ইউনুস সাহেব আমাদেরকে একটা ঝামেলার মধ্যে ফেলে দিয়ে  দেশ ত্যাগ করবে!

তার কথা শুনে আমরাও একটু হতবাক হয়েছিলাম।

জুলাই বিপ্লবের পর একটি বছর পার হয়ে গিয়েছে এবং  বৈষম্য বিরোধীদের ছাত্ররা বা  এনসিপি সংস্কার সংস্কার বলে চিৎকার করছে এবং সাথে সাথে ডক্টর ইউনুস তাতে সাড়া দিচ্ছেন বারবার।

মাসের পর মাস যাব সংস্কার নিয়ে মিটিং হল তারপর ঐক্যমতের সংস্কারগুলো নিয়ে মিটিং হল ইত্যাদি ইত্যাদি।

কিন্তু দিনের শেষে আমরা দেখতে পাচ্ছি একটা বিরাট শূন্য, অর্থাৎ এত কিছুর পরও ফলাফল শুন্য।

অর্থাৎ  সংস্কার কিভাবে বাস্তবায়িত হবে সে নিয়ে ডক্টর ইউনুস এর কোন বক্তব্য নাই, উনার নিষ্ক্রিয় অবস্থান।

ছাত্ররা বা এনসিপি দাবি করছে সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য গণপরিষদ নির্বাচন দরকার অথবা গণভোটের দরকার। কিন্তু ডক্টর ইউনুস এখন নির্বাচন নিয়েই ব্যস্ত, অন্য কোন বিষয়ে উনি নিষ্ক্রিয় অথবা সংস্কার বাস্তবায়নের  ব্যাপারে উনি নিশ্চুপ!

ব্যাপারটা অনেকটা সাপ লুডু খেলার মত —সংস্কার সংস্কার বলে অনেক সময়ে জ্ঞাপন করার পর এবং অনেকদূর গমন করার পর এখন পিসল পথে ভুমিতে ভূপতিত হবার অবস্থা।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পরও আমরা প্রকৃত স্বাধীনতা বা গণতন্ত্র পাইনি এবং ৯০ এর গন আন্দোলনের পরও আরেকটি প্রকৃত স্বাধীনতা পাইনি, সবকিছুই শেষ পর্যন্ত গড়ে হরিবল। জুলাই বিপ্লবের পর রাজনীতিকে সঠিক রেললাইনে উপস্থিত করার জন্য যে সকল সংস্কার কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে তা যদি বাস্তবায়িত না হয়,

*তবে ফ্যাসিবাদ প্রত্যাবর্তন করতে বাধ্য।*

বর্তমান পরিস্থিতিতে ২০২৪এ জুলাই বিপ্লবের রক্তাক্ত সূর্যটা ডুব দিয়ে আরেকটি সকালে উদয় হওয়ার প্রতীক্ষা  করছে। বাংলাদেশের ভাগ্যে এমনটাই ঘটেছে বারবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *