সেলুন বিভ্রাট
হানিফ সংকেতের একটা নাটক দেখছিলাম ইউটিউবে, বহু পূর্বের নাটক,
১৯৯৮।
জাহিদ হাসান ওশমী কায়সার। নাটকের একপর্যায়ে গ্রাম থেকে আসা জাহিদ হাসান সেলুনে ঢুকেছে দাড়ি কাটার জন্য। দাড়ি অর্ধেক কাটার পর পরই বিপত্তি। জাহিদ হাসানের ডান পাশে বসে আরেকজন চুল কাটাচ্ছিল, দেখতে কিছুটা মাস্তানের মত। হঠাৎ করে সেলুনে তিন চারজন সন্ত্রাসী ঢুকে পাশের লোকটাকে ঘেরাও করে, চিল্লাচিল্লি করতে শুরু করলো ও
মারতে লাগলো।
ভয়ে জাহিদ হাসান সেলুন থেকে দৌড়ে বেরিয়ে গেল।
হঠাৎ আমার মনে পড়ে গেল,
এ রকমই একটি ঘটনা আমার জীবনে ঘটে ছিল সেই ১৯৯৭/৯৮ সনে,নাটক মঞ্চস্থ হবার সমকালীন সময়ে।
তখন মতিঝিলের আফা অফিসে আমি ও
আনিস ছিলাম। আলমগীর ফ্যাক্টরিতে ছিল। তখন ৯ টা ৭টা অফিস করতে হতো, অনেক কাজ-কর্ম থাকতো। আমি সাধারণত বারোটার সময় নিচে নেমে ঘোরাফেরা করতাম তারপর জোহরের নামাজের আগে অফিসে ঢুকতাম।নিত্যকার রুটিন ছিল, প্রায় ২০ বছর সেটা মেন্টেইন করেছি।
সেদিন ঠিক বারোটার সময় অফিস থেকে বেরিয়ে পড়েছিলাম,যথারীতি। হঠাৎ করে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে পাশের একটা সেলুনে ঢুকে পড়লাম, চুল কাটার জন্য। চুল কাটা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই একটা বড় ধরনের বিপত্তি ঘটলো।
হঠাৎ করে এত বড় বিপদের সম্মুখীন হয়ে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেলাম। একটা বিশ বাইশ বছরের উদ্ভ্রান্ত যুবক, হাতে একটা পিস্তল —চিৎকার করে বলছে, আজকে সব হালারে মাইরা হালামু —তার ভয়ঙ্কর সব কথাবার্তা শুনে বুকের রক্ত হিম হয়ে গেল। হঠাৎ করে আমার বুকটা ভিশন ভাবে ধড়ফড় করা শুরু করলো।
ওই যুবকটা পিস্তল উঠিয়ে ধমকের সুরে কথা বলতেই থাকলো। বেশ কিছু সময় পর একটা জ্যেষ্ঠ কর্মচারী নরম নরম কথা বলে যুবকটাকে কিছুটা বাগে আনলো।
সুযোগ পেয়েই, সুরুত করে আমি সেলুন থেকে বেরিয়ে গেলাম, উপরোক্ত নাটকের জাহিদ হাসান এর মত।
অফিসে আসার পর আনিসের উক্তিটি এখনো মনে আছে, ;
গুলিস্তানে কয়েক বছর আমি হাইজ্যাক পার্টির পাল্লায় পড়ে মানিব্যাগ খুইয়েছিলাম।আনিস সে কথা উল্লেখ করে, বলল,
এখন আবার সেলুনে ঢুকে কান্ড ঘটালি!!?