অনেকদিন যাবত ভাবছিলাম গরুর মাংস রান্না করবো। দুই যুগ পেরিয়ে গেছে কিন্তু রান্না করব করব কিন্তু সুযোগ হয়ে ওঠেনি।
বেশকিছুদিন বউ বাড়িতে নেই।
এদিকে রাধুনী গরুর মাংস ভালো রান্না করতে পারে না। চেষ্টা করেছে অনেকবার, কিন্তু রান্নায় কিছু একটা ঝামেলা করে খাবারের অনুপোযোগী করে বসে।
তাই আমিও ভাবছিলাম যে নিজেও রান্না করব, সাথে সাথে,
বুয়াকে রান্নাটা শিখিয়ে দেব। মাংস রান্নায় দুটি দিক খেয়াল রাখতে হয়, পরিমিত মসলা এবং পর্যাপ্ত কসানো।
আমি বুয়াকে বললাম,
এক কেজি মাংসের অনুপাতে পিয়াজ কাটো,
কিছু পিয়াজ বাটো, চিকন জিরা, মিষ্টি জিরা বাটো ইত্যাদি ইত্যাদি। আদাবাটা রসুনবাটা তো সংরক্ষিত থাকে।
বুয়া পিয়াজ কেটে আনলো, পেঁয়াজবাটা নিয়ে আসলো। দেখে আমার মাথা ঘুরে গেল।
চারটা পেঁয়াজ কুচি কুচি করে কেটেছে আর ওদিকে ১৫/২০টা পেঁয়াজ বেটে এনেছে। বুঝলাম রান্নায় সে পরিপূর্ণ বকলম। ফাকি দিয়ে রাধুনী বলে ঢুকে পড়েছে।
অন্যান্য মসলার পরিমানও অস্বাভাবিক ছিল।
আদা রসুন ও মসলার পরিমাণ ঠিক করে দিলাম। বললাম,রান্না শুরু করো।মসলা আগে দিবে,
না আদা রসুন আগে দিবে, এ ব্যাপারেও পরিপূর্ণ অজ্ঞ। সাধারণত বুয়ারা রান্না চুলায় চড়িয়ে অন্য কাজ করে এবং অনেকক্ষণ কসানোতে সময় দিতে চায়না। সেজন্য রান্না মজা
হয়না।
আমি তাকে চুলার কাছে দাঁড়িয়ে থেকে,
এক ঘন্টা ধীরে ধীরে কষাতে বললাম এবং একসাথে বেশি পানি না দিতে বললাম।
দুই
ঘন্টা পর চুলা থেকে রান্না করা মাংস নামানো হলো।
পরদিন সকালে ছোটা বুয়াকে মাংস দিলাম,। বলল, স্যার অনেক মজা হয়েছে —রাধুনীকে বলবেন, এভাবে যেন রান্না করে।
বললাম, রান্নাতো রাধুনী করেছে!
ছুটা বুয়া হেসে বলল,
রেধেছেন আপনি!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *