আমাদের জীবনকাল বিভিন্ন অংশে বিভক্ত
শৈশবকাল কৈশোর যৌবনকাল বৃদ্ধকাল—প্রতিটি অংশে রয়েছে একেক রকম কথামালা
একেক রকমকাহিনী.। টক ঝাল মিষ্টি হাসি আনন্দ নিয়েই জীবনকালের প্রতিটি অংশকে, প্রতিটি অধ্যায় কে
উপভোগ করতে হয়,
কখনো ধৈর্য ধরে
যন্ত্রনা বিড়ম্বনা সহ্য করতে হয়।
৪-৫ মাস আগে ডক্টর সেলিম(আমার স্কুলের সহপাঠী ঢাকা কলেজের সহপাঠ) সাকুরের চেম্বারে গিয়েছিলাম আমার কবিতার বইটি উপহার দিতে। সেলিমের সাথে গল্প করছি সময় গড়িয়ে যাচ্ছে
বাইরে বসা রোগীরা ,
রোগীর মা-বাপেরা অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিল।
আমি চেম্বার থেকে বেরোনোর সাথে সাথে তারা আমারে ঘিরে ফেলল ,
বিভিন্ন প্রশ্ন বানে জর্জরিত করল।
আমি বললাম ২০ বছর আগে এই সেলিমের চেম্বারে আমি ঘন্টার পর ঘন্টা বাচ্চাদের নিয়ে বসে থেকেছি। এখন বাচ্চারা বড় হয়ে গিয়েছে আমি জীবনের অন্য অংশে ভূমিকা রাখছি।
তোমরা এখন
আমাদের বাচ্চাদের মতো, ৩০-৩৫ বছরের বয়সে পৌঁছে গেছো দু একটা বাচ্চাকাচ্চা হয়েছে এবং তাদের নিয়ে বিরম্বনা। অসুখ-বিসুখ লেগেই আছে। আমার জীবনেও একটা সময় অমনটাই ছিল। অসুস্থ বাচ্চাদের শিয়রে রাতের পর রাত বিনীন্দ্র রজনী যাপন করতে হয়েছে।
এখন তোমাদের পালা, তোমরা ধৈর্য নিয়ে মোকাবেলা কর।
আমাদের ছেলেমেয়েরাও
এই মুহূর্তে তাদের ছোট ছোট বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিব্রত থাকে অসুখ-বিসূক নিয়ে আতঙ্কিত থাকে শঙ্কায় থাকে।
এটাএকটা চলমান ধারা ,যেটা এক কালে আমি করেছি তার আগে আমার বাবা-মা করেছিল। এখন আমাদের বাচ্চাদের পালা।
যে বেকার কর্ম নাই তার ব্যথা বিড়ম্বনা , একজন কর্মজীবীর পক্ষে সম্পূর্ণ অনুধাবন করা কষ্টকর। তদ্রূপভাবে বয়স্ক অবসরপ্রাপ্ত , টাকা পয়সা থাকার পরও,
তাদের,ও বিড়ম্বনা ব্যথা বেদনা আছে ,
আশেপাশের সমাজ , এমনকি নিকটজনেরাও,
খুব কমই উপলব্ধি করতে পারে।
বয়স্ক বাবা-মার নিঃসঙ্গতা
আর সন্তানের সাহচার্য পাওয়ার আকলতা ,
সেটা ওই বয়সে না পৌঁছে কেউ বুঝতে পারবে না।
আমরাও বুঝিনি।
এই বিরাট জনগোষ্ঠীর একাংশ হয়তো বেকার আছে আর এক অংশ হয়তো কর্মজীবী আরেক অংশ হয়তো অবসরে আছে,।
প্রত্যেকেরই ভিন্ন ভিন্ন জীবনযাত্রা ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা ভিন্ন ভিন্ন বিড়ম্বনা,
ভিন্ন ভিন্ন হাসি আনন্দ।
জীবনটা এই ভাবেই চলছে চলবে এবং সেটা সমস্ত পৃথিবীর জন্য মোটামুটি একই রকম। পৃথিবীর আটশো কোটি মানুষ,সবার,ই, টক ঝাল মিষ্টি হাসি আনন্দ গড়া জীবন।
বয়স্কদের অবশ্যই বেশি বেশি নিজের কর্ম ব্যস্ত ছেলেমেয়েদের জীবনে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বর্তমানে কঠিন জীবনের বাস্তবতায় অনেক কিছু আশা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

আবার আমাদের ছেলেমেয়েদের প্রধান সমস্যা,
তাদের ছোট ছোট ছেলে মেয়ে। অসুখ-বিসুখ স্কুল ইত্যাদি বিভিন্ন
বিড়ম্বনা দু চিন্তা,
বাপ-মা উভয়ের,
বিশেষত মায়ের।

তাদের,ও উচিত হবে সাধ্যমত তাদের সমস্যাগুলো সমাধান করে জীবন চালিয়ে নেওয়া, খুব জরুরী বিষয়গুলো ছাড়া তাদের বাবা-মা বা গুরুজনদের সাথে ওগুলো শেয়ার না করা।
জরুরি কিছু হলে অবশ্য অবশ্যই বাপ-মা বা নিকট আত্মীয়-স্বজনরি,
পাশে এসে দাঁড়ায় , সমাজটা মোটামুটি এখনো সেরকমই আছে।
যখন ব্যান্ড সংগীত হয় একজন গান গায় একজন তবলা বাজায় একজন গিটার বাজায়
একজন ঝুমকা বাজায় ইত্যাদি ইত্যাদি।
সেই রকমই আমাদের জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ে একেকজন একেকটা কাজে ব্যস্ত, সেটাই সুন্দরভাবে সমাধান করা প্রত্যেকের
নিজ নিজ দায়িত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *