জীবনটা বড্ড ছোট
কুড়িতে
শেষ হয়ে যেতে পারে আবার আসিতেও
শেষ হতে পারে।
পুরাতন দিনের মানুষেরা প্রতিদিন দিনের হিসাব হয়তো রাখত এবং জীবনটা যে ছোট্ট সেটাও জানতো এবং উপভোগ করার চেষ্টাও করতো।
তাই তারা ছেলেমেয়ে স্ত্রী সহ একটা সত্যিকারের পরিবারের মধ্যে বসবাস করত। প্রতিটি ঘরে মাসের পর মাস দুই একজন আত্মীয়-স্বজন এসে থাকতো। সেটাও একটা আনন্দের ব্যাপার ছিল। নাস্তা দুপুরের খাওয়া রাতের খাওয়া একসাথে সবাই খাবারের সাথে গল্প গুজব করত।
পাড়া প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক ছিল। তেলটা নুনটা চিনিটা পরস্পরে আদান-প্রদান হতো কোনরকম অসম্মানবোধ ছাড়াই।
তখন পান থেকে চুন কষলেই, গেল গেল ,
ইজ্জত গেল সম্মান গেল
এই ধরনের আহাজারি ছিল না।
*মানুষ মানুষের সাথে মানুষের মতো আচরণ করতো। *
ছেলেমেয়েরা পাশের বাড়ির খালাম্মা দিদিমা থেকেও
আদর ভালবাসা পেত। গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মানবোধ ছিল অপরিসীম।
এখন এরকম অবস্থা যে টিনেজার দেখলে গুরুজনরা মুখ লুকিয়ে অন্যদিকে পালায়। লেকের পারে হাঁটার সময় একবার পাঁচটা টিনেজার মেয়ে আমাকে প্রায় ঘিরে ফেলল ,
রাস্তা দিচ্ছিল না ,
যাওয়ার জন্য।
কলিকাল বলে কথা!
এখনকার সমাজে প্রায় প্রতিটি ঘরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলে আছে। বছরের ৩৬৫ দিন,এর ২৯৯ দিনে ঘরের মধ্যে ফেতনা ফেশাদ অশান্তির ঘন ঘন্টা। দাম্পত্য কলহ ছেলেমেয়েদের সাথে কলহ আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কলহ পাড়া পড়শী দের সাথে কলহ,
ইত্যাদিতে জীবনের ৮০ভাগ সময় ব্যয় হয়ে যাচ্ছে।
৩৬৫ দিন থেকে ২৯৯ বাদ দিলে থাকে ৬৬ দিন। এই ৬৬ দিন হয়তো বিভিন্ন রকম পালা পর্বন অনুষ্ঠান বার্থডে মেরেজ শিরোমনি পিকনিক ইত্যাদি চলে, তাই কিছু আনন্দে জীবনটা কাটে। ঐ টুকুনটাই এখন সম্বল।
পুরানো দিনের মানুষদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ দাম্পত্য জীবন আমরা দেখে এসেছি ,
বাবা মাদের মধ্যে ঝগড়া দেখি নাই
চাচা চাচির মধ্যে ঝগড়া দেখি নাই,
পাড়া পড়শীরাও এরকমটাই ছিল।
এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সাপে নেওলে সম্পর্ক। পরিবারের উত্তপ্ত গরম হাওয়ায় ছেলেমেয়েরা ভাজা ভাজা হচ্ছে। তাদের একটা মজার শৈশবকাল হওয়া উচিত ছিল, তারা এখন জুরাসিক পার্কে বসবাস করে, হিংস্র জন্তু-জানোয়ারের সাথে।
শিক্ষকদের আমরা বাবার সাথে তুলনা করে সম্মান করতাম। সে এখন গুড়ে বাড়ি। বিপরীতে দেখা যায় শিক্ষকও কখনো কখনো ধর্ষক।
আমরা অন্ধের মতো কন্টক বিছানো রাস্তা দিয়ে জীবনটা পার করছি। তবে কন্টাকের মধ্যে অনেক সময় হিরা চুনি পান্না ও থাকে। তাই আমাদের জীবনটা রসকস হিন বিলাসময়।
মনের মূল্যবোধ নাই জীবনের কোন ভালো দিক নির্দেশনা নাই।
ধীরে ধীরে জন্তু-জানোয়ারের মতো সংস্কৃতি সমাজে প্রবেশ করছে।
আমরা কোরআন থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছি। মাঝখানে একটা বিশালফাঁকা জায়গা তৈরি হয়েছে।
কোন জায়গায় ফাঁকা থাকে না।
ফাঁকা জায়গায় শয়তানে এসে বসবাস করে ডিম পাড়ে বাচ্চা
দেয়।
শয়তান নিজে ও শয়তান প্রকৃতির মানুষ আমাদেরকে ঘিরে ফেলেছে।
আমাদেরকে তাই তড়িৎ গতিতে কোরআনের কাছে ফিরে যেতে হবে।