ঢাকা শহরের রেস্তুরা বিলাস-প্রথম পর্ব
ঢাকা শহরের সত্তর দশক এবং আশির দশকের রেস্তুরাগুলোর
কথা মনে পড়ছে।
আমি ঢাকা কলেজের ছাত্র ছিলাম। তখন এই কলেজের সামনে অনেকগুলো নামী দামী রেস্টুরেন্ট ছিল। আমরা প্রয়োজন হলে চিটাগাং রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ বা ডিনার করতাম। লঞ্চে ওখানে দেশি মুরগির ভোনা সাথে ডাল,একটা টাকা চারা আনায়
পাওয়া যেত।অত্যন্ত সুস্বাদু ছিল সেই খাবার। বারো আনা খরচ করে গরুর মাংস দিয়ে খাওয়া যায়। ডিনারে খাসির মাংস পাওয়া যেত। এক টাকা খরচ হতো।
পাশেই ছিল মরন চাঁনের মিষ্টির দোকান। ওখানকার দই-মিষ্টি খুব জনপ্রিয় ছিল।
সকালের নাস্তায় দেশপ্রিয়,র পরোটা হালুয়ার কথা এখনও ভুলতে পারিনা।
সন্ধ্যায় কিছু কিছু রেস্টুরেন্টে খাসির বটি কাবাব পাওয়া যেত। সস্তায় খেতে হলে কিমা পরোটা।
ঢাকা কলেজে আমি খুব কমই ক্লাস করেছিলাম।
।তবে আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ক্লাস কখনও ফাঁকি দিই নি । মাসের পর মাস স্যার,
হৈমন্তী গল্পটি পড়িয়েছিলেন।
এখন মনে হয়,হৈমন্তীর প্রতি উনার অস্বাভাবিক আবেগ ছিল।
টই টই করে ঘুরে বেড়াতাম। প্রায় সময়ই গুলিস্তান চলে যেতাম,গুলিস্তান সিনেমা হলে বহু সিনেমা দেখেছি। ছোট সিনেমা হল হলেও নাজে
ভালো ভালো ইংলিশ বই আসতো।
তখনকার জিন্নাহ এভিনিউ’র পূর্ণিমাতে ভালো SNACKS পাওয়া যেত।চিকেন ফ্রাই এর সাথে বনরুটি একটাকা চার আনা । সাশ্রয়ী মূল্যে বার আনায় মাটন চাপ পাওয়া যেত।
মোগলাই খাবারের দিকেও আমার ভালো আকর্ষণ ছিল। সেজন্য চলে যেতাম স্টুডিয়াম মার্কেট এর প্রভিন্সিয়াল রেস্টুরেন্টে। ওখানকার খাসির রেজালা দুর্দান্ত ছিল।
ক্রিকেট খেলার সময় স্টেডিয়াম মার্কেট টা জমে উঠতো। দুপুরে অনেক রকম খাবারের সমারহ ছিল।
মনে পড়ে বুয়েট লাইফে আমি আলমগীর আনিস চকবাজারের খাবার-দাবার রেস্টুরেন্টে চলে যেতাম, মোরগ মোসাল্লাম খাওয়ার জন্য। একটা আস্ত মুরগির রোস্ট এবং পোলাউ ফ্রী। দাম ষোল টাকা ছিল।
বুয়েটের কিছু দূরে মিণু মিয়ার বিরানি অত্যন্ত বিখ্যাত ছিল।
সোহরাওয়ার্দী হলের কাছে
একটি সস্তা হোটেল ছিল, আনিস ওটাকে ময়লা হোটেল নাম দিয়েছিল।দশ টাকা হলেই চারজন ভালোভাবে দুপুরের খাবার খেতে পারতাম।
কম খরচে পপুলারের খাবার সবার জন্যই প্রিয় ছিল তখন।
চলবে—+