সকালের রোজনামচা ও ধানমন্ডি লেক

0

সাধারণত ভোর ছয়টা বা সাড়ে ছয়টায় বেরিয়ে পড়ি।সেইসময় জনমানবশূন্য রাস্তায় কিছু কুকুরের ঘোরাফেরা দেখতে পাই।
আমি রাস্তার একপাশ দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে তাকওয়া মসজিদ পার হয়ে লেকের ভেতরে ঢুকে পড়ি।
হাঁটতে থাকি—
এক পাশে লেইক,
অন্যপাশে গাছপালার সমারোহ।
একটা ঝিরঝির বাতাস মন-প্রাণ কে প্রশান্ত করে তোলে। লেকে লাল লাল শাপলা ফুলের তান্ডব সৌন্দর্য। মাঝেমধ্যে সাদা হাঁসের ভেসে বেড়নোর মুগ্ধ দৃশ্য।
লেকের পাশে বিভিন্ন জায়গায় খন্ডে খন্ডে বিভিন্নভাবে ব্যায়ামের মহড়া। মেয়েরাও দলবেঁধে ব্যায়ামে ব্যস্ত, করোনার পর এরকমটা বেশি দেখা যাচ্ছে। করোনার আগে লেকে, যে ধরনের জনসমাগম হত সকাল ও সন্ধ্যায় —এখন তা অনেক অনেক বেশি।
দু তিনটে পয়েন্টে ব্যাডমিন্টন খেলা হচ্ছে। দুটি পয়েন্টে ফুটবল খেলাও হয়।
সকাল সাতটার মধ্যে রেস্টুরেন্ট গুলো খুলে যায়। প্রথমে রবীন্দ্র সরোবর এর পাশে দুটি জায়গায় সিঙ্গারা উৎসব শুরু হয়
সাথে মালাই চা। সকালে গরম গরম সিঙ্গারা ভক্ষণ বেশ পরিতৃপ্তির ব্যাপার। এ সময় বিভিন্ন স্থানে দলবেঁধে আড্ডা চলতে থাকে। মেয়েরাও পিছিয়ে নাই, তারাও দলবেঁধে আড্ডা মারে। কোন যুগল বা স্বামী স্ত্রী আড্ডা মারতেছে বা একসাথে নাস্তায় করতেছে, এই দৃশ্য বিরল।
ডাস রেস্টুরেন্টটি নতুনভাবে রকমারি খাবার নিয়ে সজ্জিত হয়েছে । এখানটায় প্রশস্ত জায়গা ও
পরিবেশ অত্যন্ত ভালো।
সন্ধ্যায় হালকা ভাবে ডিনার করার সুবন্দোব্যস্ত আছে।
এদিকে ডিঙ্গির পাশের রেস্টুরেন্টটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে।
ওখানে স্ট্যান্ডার্ড খাওয়ার ব্যবস্থা আছে। শুক্র ও শনিবারের ওখানে রকমারি নাস্তা আয়োজন করা হয়।
রবীন্দ্র সরোবর ঘেষে লেকের পাড়টা প্রায় সময়ই মিনাবাজারে রূপান্তরিত হয়ে যায়।একপাশে মাঠা, সাথে ননী পরিবেশন করা হচ্ছে। বিভিন্ন উপাদান মিশিয়ে কাঁচা বা সিদ্ধ ছোলা বিক্রি হয়, এখানেই ভিড় বেশি। দুই লেকের সংযোগস্থল ব্রিজের পাশে প্রায় সময় একজন গায়ক দরদী গলায়
গান পরিবেশন করে। মাঝেমধ্যে বয়স্ক গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরও গানের তালে অল্প কিছুক্ষণ নাচতে দেখেছি।
ফাঁকে ফাঁকে মেয়েদের রকমারী কাপড় অথবা পুরুষদের গেঞ্জি ট্রাউজার ইত্যাদি বিক্রি হচ্ছে। সবকিছুই গ্যারান্টি সহ সুলভ মূল্যে পাওয়া যায়।

সকালে ঘন্টা দেড়েক হাটাও আড্ডা,
হালকা নাস্তার মাধ্যমে মনটাকে সারাদিনের জন্য প্রফুল্ল করা যায়।
বেলা বারোটার পর সমস্ত লোকের পাড় টিনএজারদের দখলে চলে যায়। স্কুল পালানো বহু ছেলেমেয়েকেও দেখা যায়।
রচনাকাল ঃ

সোমবার,
পহেলা আগস্ট
সকাল 7:30

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *