ছেলেটি পার্কে বসে আছে।এইমাত্র ইন্টারভিউ দিয়ে এসেছে, কিন্তু বুঝতে পেরেছে চাকরি হবে না।সে এম বি এ পাস করেছে। কিন্তু ইন্টারভিউতে বেশিরভাগ প্রশ্ন বিজ্ঞান থেকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে।মনে হচ্ছিল সে NASAর বিজ্ঞানী পদে ইন্টারভিউ দিচ্ছিল।
ভাগ্যকে দোষারোপ করে মনে মনে বিড়বিড় করছিল,
এমন সময় একটা মেয়ে তার সামনে এসে দাড়ালো,
হাতে একটি গোলাপ ফুল। মেয়েটিকে দেখে ফুল বিক্রেতা মনে হচ্ছিল না।
মেয়েটি বলল, একটি ফুল নিন, মাত্র দশ টাকা।
ছেলেটি বলল, আমার ফুলের কোন দরকার নেই।
এবার মেয়েটি বলল, আপনার গার্লফ্রেন্ড খুশি হবে
ওর জন্য নিন।
ছেলেটি এবার কিছুটা রেগে গিয়ে বলল,
আমার ওসব গার্লফ্রেন্ড,
কিছুই নেই।
মেয়েটি এবার বলল,
তাহলে আপনি নিজের জন্যই ফুলটা নিয়ে নিন।
আবার বলল, আমি ফুল বিক্রেতা নই।
ওই যে ওই বেঞ্চে,
ছোট মেয়েটি বসে আছে, হাতে ফুলের গোছা —সে ফুল বিক্রি করতে পারছিল না বলে,
কান্না করছিল। তাই তারা হয়ে আমি ফুল বিক্রি করতে চাচ্ছি।

দশ টাকা দিয়ে একটা ফুল নিয়ে নিন!
এবার ছেলেটি দীর্ঘশ্বাস নিয়ে বলে উঠলো, আমার কোন চাকরি নেই,
শুধু ইন্টারভিউ দিয়ে বেড়াই।
আমার পকেটে কোন টাকা নেই।

মেয়েটির মত আমিও চমকে গেলাম। প্রায় তেতাল্লিশ বছর আগের স্মৃতি মনে পড়ে গেল।
তখন সন্ধ্যা হয় হয়,
আমি দুবাই ট্যাক্সি স্ট্যান্ড এ দাড়িয়ে আছি।
ওই ছেলেটির মতো ওই মুহূর্তে আমার পকেটে কোন টাকা ছিল না।!!
আমি সকালে দুবাই এসেছিলাম ইন্টারভিউ দিতে। ইন্টারভিউ ভালো হওয়ার পরও কাজের অভিজ্ঞতা ছিলোনা বলে চাকরি হয় নাই।
দুবাই টেক্সি স্ট্যান্ডে শান্ত মনে অপেক্ষা করছিলাম,
কোন দৈব ঘটনার জন্য।
কারণ আমাকে দুই শত কিলোমিটার দূরে আবুধাবিতে ফিরে যেতে হবে।

এখানেই গল্প শেষ।

,—–(কৌতূহল মেটানোর জন্য)
বাস্তবে দৈব ঘটনা ঘটেছিল।
হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হলো, আমার পরিচিত দুই বছরের সিনিয়র মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জানে আলম ভাই।
সকালে দুবাই এসে নাস্তা করেছি, তারপরে ইন্টারভিউ দিয়েছি। দুপুরে লাঞ্চ করেছি।সন্ধ্যার পর দুবাই আবুধাবির
ট্যাক্সি ফেয়ার অর্ধেক হয়ে যায়।
তাই ম্যাটিনি শো দেখতে পাশের একটি হলে ঢুকে পড়লাম।
সিনেমা
শেষে,
হল থেকে বেরিয়ে,
বুঝতে পারলাম,
পকেটে কোন টাকা নেই,
সব ফুরিয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *