আল্লাহ বিহীন নীতিদর্শন-চতুর্থ পর্ব
সক্রেটিসের পর ঃ
নীতি দর্শনের যে বীজ সক্রেটিস বপন করেছিলেন, প্লেটো হচ্ছেন তার কুড়ি এবং এই এরিস্টোটল ফল।
এই দুজন প্রকৃতি তত্ত্ব ও অতি- প্রকৃতি তত্ত্ব উদ্ধ দর্শনে অত্যন্ত খ্যাতিমান ওসুপরিচিত ব্যক্তিত্ব।
নীতির দর্শনেও তাদের অবদান সর্বাধিক ও বিশিষ্ট মর্যাদার অধিকারী। সক্রেটিস সুদীপ্ত দর্শনকে প্লেটো, এরিস্টটল, সুসংবদ্ধ এবং সম্প্রসারিত করেছেন। কিন্তু মনে রাখা দরকার যে বিজ যেমন,
ফল তেমনই হওয়াই স্বাভাবিক।
কান্ড যেমন তার শাখা-প্রশাখা ও তেমনি হবে,
এটা অনস্বীকার্য।
প্লেটোর সংলাপ ওএরিস্টোটলের নৈতিকতা সংক্রান্ত চিন্তাধারার,
ভালো —-” মন্দ “সম্পর্কে কোন সম্মিলিত সুসংবদ্ধ চিন্তার সন্ধান পাওয়া যায় না ঃ
বরং তা তেও প্রচুর পরস্পর বৈপরীত্য ও সংঘর্ষ প্রকট।
ভালো কে অবলম্বনও মন্দকে পরিহার মানুষের পরিপূর্ণতার প্রমাণে,
এ কথা সব দার্শনিক বলেছেন।
কিন্তু তারা কেউই ভালো ও মন্দ—এর নিগুর তত্ত উদঘাটন করতে সমর্থ হন নি।
কেননা তারা সকলেই কেবলমাত্র বিবেক-বুদ্ধি ও হৃদয়ের অনুভূতির উপর নির্ভর করেছেন ও কেবল তারই প্রদর্শিত পথে চলেছেন।
মানুষের বিবেক বুদ্ধি যেখানে এসে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়ায়,
সম্মুখে অগ্রসর হতে অক্ষমতা প্রকাশ করতে বাধ্য হয়,এই
বিষয়টি সর্বাধিক জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ।
দার্শনিকগণ পরম কল্যাণ কে মানুষের প্রকৃত সৌভাগ্য বলেছেন।
কিন্তু সেই সৌভাগ্য অর্জনের উপায় কি,
তা বল তাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। বিবেক-বুদ্ধি দ্রুতগতি এখানে পৌঁছে থেমে গেছে।
সক্রেটিস প্লুটো অ্যারিস্টোটল আল্লাহ অমান্যকারী নন,এ কথা ঠিক।
এদের প্রত্যেকেই বরং আল্লাহর অস্তিত্বের প্রতি বিশ্বাসী।
তিনি মত প্রকাশ করতেন যে মানুষের উপর অতিপ্রাকৃতিক শক্তি ও সত্তা সমূহের সমূহের অস্তিত্ব প্রভাবশালীর রয়েছে।
কিন্তু আসল কর্তৃত্ব রয়েছে এক আল্লাহতালার যিনি নিরঙ্কুশ কল্যাণ, নিরঙ্কুশ জ্ঞান, পূর্ণাঙ্গ বুদ্ধি, ন্যায়বান, প্রজ্ঞার প্রতীক ও সারা জাহানের রব।
কিন্তু দার্শনিকগণ আল্লাহর ওহীর সাথে পরিচিত ছিলেন না বিধায় তারা আল্লাহর গুণাবলী সাথে পরিচিত ছিলেন না।
এই জীবন কালে পরিসমাপ্তির পর চূড়ান্ত হিসাব নিকাশের কোনদিন সম্পর্কেও তাদের কোন ধারণা ছিল না,
কেবল বিশ্বলোকের প্রাচীনত্ব ও চিরন্তনতার প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন তারা।
এরিস্টোটল পর্যন্ত এসে আল্লাহ এক অপরিহার্য সত্তা (ওয়াজিবুল ওজুদ)
কারণসমূহের আদি কারণ, (ইল্লাতুল ইলাল)
হিসেবেই শুধু অবশিষ্ট ছিলেন।
এহেন দর্শন চর্চার মাধ্যমে ঈমান ও প্রত্যয় নূর পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই,
আর প্রত্যয়ের আলো কিছুটা ফুটলেও ও শেষ পর্যন্ত তা সংশয়ের অন্ধকারে হারিয়ে যায়।