জীবনের শ্রেষ্ঠ নয় মাস
ওই নায় মাস আমি কিন্তু বেকার ছিলাম তবুও ওটাই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় বলে আমি মনে করি। নয় মাসের ২৭০ দিনই ছিল ঘটনা বহুলএবং প্রতিটি দিনে উপভোগ করেছি বিভিন্ন ভাবে। নিজের চেষ্টায় রান্না শিখলাম পোলাও রোস্ট ইত্যাদি, খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল । সপ্তাহে দু-তিনটা সিনেমা দেখতাম। আল খাদরা বলে একটা নোংরা সিনেমা হল ছিল আলমারি আর অপজিটে। টিকিটের দাম অল্প ছিল। আজেবাজে ইংলিশ সিনেমা চলত। আমি ওখানকার নিয়মিত দর্শক ছিলাম। বিকেলে কার্নিশের সমুদ্র সৈকতে আমি একা একা বসে বসে একান্তভাবে সময় কাটাতাম সব কিছু উপভোগ করতাম। আর সপ্তাহে দু’দিন, একদিন টেক্সি করে দুবাই যেতাম চাকরির খোঁজে অথবা ইন্টারভিউ দিতে সেখানেও ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের পাশে সিনেমা দেখতাম। আমের জুস মাজা খেতে খুব পছন্দ করতাম। দুই টাকা বা দুই দেরহামের বিফ শর্মা খুবই প্রিয় ছিল। এক রুমে চারটি ডাবল খাটে আটজন থাকতাম ছয়জন ছিল বেকার। সবার সাথে মিল মিস ছিল,
হাসি আনন্দে সময় সুন্দরভাবে কেটে গিয়েছিল। রোস্টারের মাধ্যমে রান্নাবান্না পালাক্রমে চলতো। টাকার অভাবে একদিন দুপুরবেলা সবাই উপোস দিয়েছিলাম। এসি নষ্ট হয়ে যাওয়াতে একদিন ছাদে শুয়েছিলাম।
বেকার থেকেও কিভাবে যেন টাকা-পয়সা জোগাড় হয়ে গিয়েছিল ,সেটা আল্লাহ ব্যবস্থা করেছিলেন। সব সময় রাতেই দুবাই থেকে ফিরতাম। টেক্সি ১২০ কিলোমিটার বেগে ছোটে চলতো, সাথে ভারতের পুরানো হিন্দি গান।
সেই স্মৃতি এখনো আমার মনে দোলা দে।
চাকরি পেলাম অনেক টাকা হল কিন্তু বেকার জীবনের স্মৃতিটাই বারবার মনে চলে আসে।